বাংলাদেশের রাজনীতিতে ফের এক বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলাটি ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনালে গৃহীত হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সরকারবিরোধী বিক্ষোভ দমন করতে গিয়ে রাষ্ট্রীয় বাহিনী অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করে, যার ফলে সহস্রাধিক সাধারণ নাগরিক নিহত হন এবং বহু মানুষ আহত ও নিখোঁজ হন।
মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়াও তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশ প্রধানের নাম রয়েছে। আদালতের নথি অনুসারে, নিহতদের অনেকেই ছিলেন নিরস্ত্র শিক্ষার্থী ও মানববন্ধনে অংশ নেওয়া নাগরিক। বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে আগামী ৩ আগস্ট আসামিদের উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দেন।
এই ঘটনায় ঢাকাসহ সারাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বেড়েছে। একদিকে সরকারের বর্তমান অন্তর্বর্তী প্রশাসন এই মামলাকে ‘ন্যায়বিচারের পথে অগ্রগতি’ হিসেবে দেখছে, অন্যদিকে সাবেক আওয়ামী লীগ নেতারা এটিকে রাজনৈতিক প্রতিশোধ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। কিছু আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাও পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
বিচার প্রক্রিয়া শুরু হলেও রাজনৈতিক অঙ্গন শান্ত নয়। দেশের বিভিন্ন স্থানে মিছিল, প্রতিবাদ এবং পাল্টা প্রতিক্রিয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। meanwhile, সাধারণ জনগণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে— কেউ কেউ এটিকে ‘অবশেষে জবাবদিহিতার সূচনা’ হিসেবে দেখছে, আবার অনেকেই ভবিষ্যতের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার আশঙ্কা করছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মামলা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হয়ে থাকতে পারে। তবে এ মামলার ন্যায়বিচার কতটা স্বচ্ছ এবং পক্ষপাতহীনভাবে সম্পন্ন হয়, তা নির্ভর করবে আদালতের নিরপেক্ষতা ও সাক্ষ্যপ্রমাণের উপর।
এই মুহূর্তে পুরো দেশের চোখ এখন বিচার ব্যবস্থার দিকে তাকিয়ে। রাজনৈতিক জবাবদিহিতা ও আইনের শাসনের প্রশ্নে এ ঘটনা ভবিষ্যতের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে কিনা, তা সময়ই বলে দেবে।
0 মন্তব্যসমূহ