নিজস্ব প্রতিবেদন |০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫|
আগামী ৯ সেপ্টেম্বর থেকে মাঠে গড়াচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত এশিয়া কাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। এবারের আসরটি হবে সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাট অর্থাৎ টি–টোয়েন্টিতে। আসন্ন ২০২৬ সালের বিশ্বকাপ ভারত ও শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকায়, এশিয়ার সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ এই টুর্নামেন্টকে বিশ্বকাপ প্রস্তুতির অন্যতম মঞ্চ হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
এশিয়া কাপ মানেই বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের মতো দলগুলোর লড়াই। আর এই আসরে অংশ নিচ্ছে বাছাইপর্ব পেরিয়ে আসা হংকংও। গত আসরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে দুর্দান্ত খেলে শ্রীলঙ্কা শিরোপা ঘরে তুলেছিল। তাই স্বাভাবিকভাবেই এবারও লঙ্কানদের দিকে থাকবে বিশেষ নজর।
শ্রীলঙ্কার সাবেক তারকা ক্রিকেটার ও বর্তমান ধারাভাষ্যকার রাসেল আর্নল্ডও মনে করেন, এবারের টুর্নামেন্ট শ্রীলঙ্কার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে। সম্প্রতি ইন্দো–এশিয়ান নিউজ সার্ভিস (আইএএনএস)-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি শ্রীলঙ্কার গ্রুপ, প্রতিদ্বন্দ্বী দল এবং সম্ভাবনা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন।
কঠিন চ্যালেঞ্জে শ্রীলঙ্কা
আর্নল্ডের মতে, এবারের এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কা ‘বি’ গ্রুপে পড়েছে, যা কোনোভাবেই সহজ নয়। এই গ্রুপে বাংলাদেশের পাশাপাশি রয়েছে আফগানিস্তান এবং হংকং। তিনি বলেন, “গ্রুপটি হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। প্রতিটি ম্যাচ হবে চ্যালেঞ্জিং। আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ বিশেষভাবে হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।”
আফগানিস্তানকে নিয়ে সতর্কবার্তা
সাক্ষাৎকারে আফগানিস্তান প্রসঙ্গে আলাদা করে গুরুত্ব দেন আর্নল্ড। তাঁর মতে, আফগানিস্তান সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দারুণ উন্নতি করেছে। এক সময় শুধু বোলিং আক্রমণের জন্য পরিচিত হলেও এখন তাদের ব্যাটিং লাইনআপেও এসেছে পরিণতি। তরুণ ও আক্রমণাত্মক ব্যাটাররা ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারছে। ফলে প্রতিপক্ষের জন্য তারা এখন একটি ভয়ঙ্কর দল। আর্নল্ড মনে করেন, এই আত্মবিশ্বাসই আফগানিস্তানকে এশিয়া কাপের অন্যতম শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী বানিয়েছে।
বাংলাদেশকেও হালকাভাবে দেখছেন না
বাংলাদেশ প্রসঙ্গে আর্নল্ড বলেন, লঙ্কানদের সতর্ক থাকতে হবে। কারণ সাম্প্রতিক সময়ে শ্রীলঙ্কা নিজেদের মাঠেই বাংলাদেশের কাছে একটি টি–টোয়েন্টি সিরিজ হেরেছে। যদিও তাঁর বিশ্বাস, এবারের শ্রীলঙ্কা দল আগের চেয়ে অনেক বেশি সংগঠিত ও প্রস্তুত। তিনি যোগ করেন, “বাংলাদেশকে কখনো হালকাভাবে নেওয়া যায় না। তাদের দলে এমন ক্রিকেটার আছে যারা যে কোনো সময় ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিতে সক্ষম।”
হংকংয়ের উপস্থিতিও গুরুত্ব পাচ্ছে
হংকং হয়তো বড় দল নয়, তবে আর্নল্ড মনে করেন তাদের বিপক্ষে ম্যাচেও সতর্ক থাকতে হবে। কারণ, ছোট দলগুলো বড় আসরে প্রায়ই চমক দেখায়। তাই প্রত্যেকটি ম্যাচকে সমানভাবে গুরুত্ব দিতে হবে।
শ্রীলঙ্কার সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদী
সবকিছু মিলিয়ে আর্নল্ডের ভবিষ্যদ্বাণী হলো—‘বি’ গ্রুপ থেকে শ্রীলঙ্কা এবং আফগানিস্তানই সুপার ফোরে জায়গা করে নেবে। তাঁর মতে, লঙ্কান দলটি বর্তমানে সঠিক ছন্দে আছে এবং তরুণ–অভিজ্ঞ মিশ্রণে একটি ভারসাম্যপূর্ণ দল গঠন করেছে। এই ভারসাম্যই তাদের শক্তি হয়ে উঠতে পারে এবারের টুর্নামেন্টে।
শেষ কথা
এশিয়া কাপ শুধু একটি আঞ্চলিক প্রতিযোগিতা নয়, বরং বিশ্বকাপের আগে দলগুলো নিজেদের শক্তি–দুর্বলতা যাচাই করার আদর্শ সুযোগ। আর্নল্ডের মতে, শ্রীলঙ্কা এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে আবারও ট্রফি জয়ের লড়াইয়ে অন্যতম দাবিদার হয়ে উঠবে। তবে আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের মতো দলকে হালকাভাবে নিলে বিপদ ডেকে আনতে পারে লঙ্কানদের জন্য।
এবার দেখা যাক, মাঠের লড়াইয়ে আর্নল্ডের ভবিষ্যদ্বাণী কতটা সত্যি হয়।
আরও পড়ুন
১.আইসিসি র্যাংকিংয়ে বড় ধাক্কা খেলেন সাকিব আল হাসান
২.বাংলাদেশ-আফগানিস্তান দ্বিপক্ষীয় সিরিজ: এশিয়া কাপ শেষে নতুন লড়াইয়ের অপেক্ষা
৩.আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে ছক্কার সুনামি, রেকর্ড ভাঙার পথে ২০২৫
0 মন্তব্যসমূহ