নিজস্ব প্রতিবেদন | ৩০ জুলাই ২০২৫| বুধবার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর। নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, প্রার্থীরা ১৯ আগস্ট পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে ২৫ আগস্ট।
গত বছরের জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর এই নির্বাচন হতে যাচ্ছে ভিন্ন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে। আন্দোলনে সক্রিয় অনেক তরুণ এখনো শিক্ষার্থী হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছেন এবং নেতৃত্বে রয়েছেন বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের। ফলে এবারের নির্বাচনে তাঁদের গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থী হিসেবে দেখা যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এবারের নির্বাচনে প্রার্থীদের বয়সসীমা তুলে দেওয়া হয়েছে। পূর্ণকালীন শিক্ষার্থী হলেই প্রার্থী হওয়া যাবে। তবে সান্ধ্যকালীন, এক্সিকিউটিভ মাস্টার্স, ডিপ্লোমা, সার্টিফিকেট কিংবা ভাষা কোর্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত বা সংযুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রার্থী বা ভোটার হতে পারবেন না।
প্রার্থিতা নিয়ে ছাত্রসংগঠনগুলোর মধ্যে জোর প্রস্তুতি চলছে। এবার দলীয় প্যানেলের পরিবর্তে সম্মিলিত সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্যানেল গঠনের চিন্তা করছেন অনেকে। নারী শিক্ষার্থী, বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থী, অনাবাসিক ও সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্বে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
ভোট গ্রহণের জন্য এবার ছয়টি কেন্দ্র হলগুলোর বাইরে স্থাপন করা হবে। কার্জন হল, শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র, টিএসসি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব, সিনেট ভবন ও উদয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভোটকেন্দ্রগুলো থাকবে।
এবারের নির্বাচনে মোট ২৮টি পদের জন্য প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। চারটি নতুন পদও যুক্ত হয়েছে—গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক, ক্যারিয়ার উন্নয়ন সম্পাদক, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক এবং মানবাধিকার ও আইনবিষয়ক সম্পাদক।
ভিপি, জিএস, এজিএস পদে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার, সদস্যসচিব জাহিদ আহসান, মুখ্য সংগঠক তাহমিদ আল মুদ্দাসির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মহিউদ্দিন মুজাহিদ, ছাত্রদলের আবিদুল ইসলাম খান, ছাত্র ইউনিয়নের মেঘমল্লার বসু, ছাত্রশিবিরের আবু সাদিক কায়েম ও এস এম ফরহাদ এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উমামা ফাতেমা।
নির্বাচন আয়োজনের প্রক্রিয়ায় কিছু সংগঠন অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। তাঁদের অভিযোগ, সংস্কারের প্রস্তাব উপেক্ষা করে আগের কাঠামোতেই নির্বাচন হচ্ছে এবং নির্বাচন আয়োজনেও তড়িঘড়ি করা হয়েছে। তবে অনেকেই এটিকে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন এবং নিয়মিত নির্বাচনের প্রত্যাশা করছেন। বিভিন্ন সংগঠন প্রশাসনের কাছে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতের দাবিও জানিয়েছে যাতে শক্তি ও অর্থবলের প্রভাব থেকে নির্বাচন মুক্ত থাকে।
0 মন্তব্যসমূহ