add

সর্বশেষ জাতীয় আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিনোদন খেলাধুলা তথ্যপ্রযুক্তি স্বাস্থ্য ইসলাম শিক্ষা জীবনধারা

বিবাহবিচ্ছেদের দিনেই ট্রাম্প ডেটের প্রস্তাব দিয়েছিলেন: এমা টমসন।

নিজস্ব প্রতিবেদন |১১ আগস্ট ২০২৫,সোমবার 

অস্কারজয়ী ব্রিটিশ অভিনেত্রী এমা টমসন জানিয়েছেন, জীবনের এক অদ্ভুত মুহূর্তে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁকে ডেটের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ঘটনাটি ঘটে ১৯৯৮ সালে, যখন এমা ‘প্রাইমারি কালারস’ সিনেমার শুটিং করছিলেন। আশ্চর্যের বিষয়, ওই দিনই তাঁর বিবাহবিচ্ছেদের কাগজপত্র চূড়ান্ত হয়। এমার মতে, যদি তিনি প্রস্তাবটি গ্রহণ করতেন, তাহলে হয়তো আমেরিকার ইতিহাসই অন্যভাবে লেখা হতো।


৬৬ বছর বয়সী এমা টমসন সেই সময় হলিউডে বেশ সক্রিয় ছিলেন। ‘প্রাইমারি কালারস’ ছবিতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক পটভূমিকে কেন্দ্র করে নির্মিত কাহিনিতে অভিনয় করছিলেন। শুটিং চলাকালে তিনি নিজের ট্রেলারে ছিলেন। ঠিক তখনই হঠাৎ একটি ফোন আসে। অপর প্রান্ত থেকে শোনা যায়, “হ্যালো, আমি ডোনাল্ড ট্রাম্প বলছি।”


প্রথমে এমা ভেবেছিলেন, এটি হয়তো কোনো প্র্যাঙ্ক কল বা কেউ মজা করছেন। কিন্তু কিছুক্ষণ কথোপকথনের পর তিনি বুঝতে পারেন, ফোনের অপর প্রান্তে সত্যিই রিয়েল এস্টেট টাইকুন ও ভবিষ্যতের মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্প সরাসরি তাঁকে আমন্ত্রণ জানান একটি নৈশভোজে যাওয়ার জন্য। এমা খানিকটা অবাক হয়ে উত্তর দেন, “আমি আপনাকে পরে জানাব।”


পরে এমা জানতে পারেন, ওই দিনই তাঁর বিবাহবিচ্ছেদের কাগজপত্র এসে পৌঁছেছিল। তিনি রসিকতার সুরে বলেন, “সম্ভবত ট্রাম্প নতুন সঙ্গী খুঁজছিলেন, আর আমার নম্বর কোনোভাবে আমার ট্রেলারে পেয়ে গিয়েছিলেন।” এমার ধারণা, ট্রাম্প হয়তো তাঁর কাজ, খ্যাতি ও ব্যক্তিগত পরিস্থিতি সম্পর্কে কিছুটা অবগত ছিলেন। তবে সেই সময় তিনি প্রস্তাব গ্রহণ করেননি।


এক সাক্ষাৎকারে এমা মজা করে মন্তব্য করেন, “যদি আমি রাজি হতাম, তাহলে হয়তো আমেরিকার ইতিহাস বদলে যেত। অন্তত একটি আলাদা গল্প লেখা হতো।” যদিও তিনি হেসে উড়িয়ে দেন বিষয়টি, তবুও ঘটনাটি তাঁর জীবনের অন্যতম ব্যতিক্রমী অভিজ্ঞতা হিসেবে থেকে গেছে।


ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছ থেকে ডেট প্রস্তাব পাওয়ার ঘটনা এমার ক্ষেত্রে একেবারে অনন্য নয়। এর আগে হলিউডের আরেক জনপ্রিয় অভিনেত্রী সালমা হায়েকও এমন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছিলেন। সালমা জানিয়েছিলেন, একবার ট্রাম্প তাঁকে নৈশভোজের আমন্ত্রণ জানান। কিন্তু তখন সালমা একটি সম্পর্কে জড়িত ছিলেন এবং তিনি ট্রাম্পকে সরাসরি বলেন, “আপনি কি পাগল নাকি?”


সালমার দাবি, তাঁর উত্তর শুনে ট্রাম্প বলেন, “তোমার প্রেমিক তোমার জন্য যথেষ্ট ভালো নয়। তোমার আমার সঙ্গে যাওয়া উচিত।” সালমা অবশ্য এই প্রস্তাবকে একেবারেই গুরুত্ব দেননি এবং তা প্রত্যাখ্যান করেন। বর্তমানে সালমা হায়েক ফরাসি বিলিয়নিয়ার ফ্রাঁসোয়া-অঁরি পিনোর সঙ্গে বিবাহিত এবং সুখী দাম্পত্য জীবন কাটাচ্ছেন।


এমা টমসন ও সালমা হায়েকের এই অভিজ্ঞতা নিয়ে হলিউডে একসময় বেশ আলোচনা হয়। অনেকেই বিষয়টিকে হালকাভাবে নিলেও, কারও কারও মতে, এটি ট্রাম্পের ব্যক্তিগত স্বভাবের একটি দিক তুলে ধরে। বিশেষ করে ২০১৬ সালে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁর অতীতের নানা ঘটনা আবারও সংবাদমাধ্যমে আলোচনায় আসে।


এমা টমসনের অভিনয়জীবন দীর্ঘ ও সফল। তিনি শুধু অস্কারজয়ী নন, বরং চিত্রনাট্যকার হিসেবেও স্বীকৃত। অভিনয় ও লেখালেখিতে সমান দক্ষতার জন্য তাঁকে ব্রিটিশ ও আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রে এক অনন্য নাম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ব্যক্তিগত জীবনে নানা উত্থান-পতন পেরিয়ে তিনি এখনও সক্রিয়ভাবে সিনেমায় কাজ করছেন।


এই ঘটনাটি নিয়ে এমার রসিকতা—যে, ট্রাম্পের প্রস্তাব গ্রহণ করলে হয়তো যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস অন্য পথে যেতে পারত—যদিও পুরোপুরি কৌতুকের ছলে বলা, তবুও এটি সংবাদমাধ্যম ও ভক্তদের মধ্যে ব্যাপক কৌতূহল জাগিয়েছিল। বিশেষ করে, একজন অভিনেত্রীর ব্যক্তিগত জীবনের এমন অপ্রত্যাশিত মোড় এবং এক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সঙ্গে অপ্রত্যাশিত যোগাযোগ সবসময়ই আলোচনার জন্ম দেয়।


এমা ও সালমার গল্প দুটিই দেখায়, হলিউডের গ্ল্যামার দুনিয়া এবং রাজনীতির প্রভাবশালী মহলের মধ্যে কতটা অদৃশ্য সংযোগ থাকতে পারে। কখনো তা হয়তো নিছক সৌজন্য, আবার কখনো তা হয়ে ওঠে চমকপ্রদ প্রস্তাব—যা নিয়ে বছরের পর বছর পরে হলেও মানুষ গল্প করতে ভালোবাসে।

আরও পড়ুন 

ট্রাম্পের হুমকি আমলে নিচ্ছেন না রুশ প্রেসিডেন্ট।

জুলাই ঘোষণাপত্রে পক্ষপাত ও ইতিহাস বিকৃতি: বার্গম্যানের সমালোচনা

গাজা শহরের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার সিদ্ধান্ত, বিশ্বজুড়ে সমালোচনা

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ