ফুটবলপ্রেমীদের কাছে ফিফা র্যাঙ্কিং সবসময়ই আলোচনার বিষয়। তবে অনেকেই হয়তো জানেন না, ফুটবলের মতোই ফুটসালেরও আলাদা র্যাঙ্কিং প্রকাশ করে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। আর সেই তালিকায় নারী ফুটসালে বাংলাদেশ রয়েছে ৪৪তম স্থানে। আমাদের প্রতিবেশী ভারত আছে অনেক নিচে, ৮৭তম পজিশনে। এ খবর নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের ফুটসালপ্রেমীদের জন্য গর্বের।
বাফুফের নতুন পরিকল্পনা ও ফুটসাল যাত্রা
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) সাম্প্রতিক সময়ে ফুটসালকে নতুনভাবে গুরুত্ব দিতে শুরু করেছে। দীর্ঘদিন অবহেলিত থাকার পর এখন এই ক্ষুদ্র আকারের ফুটবলকে ঘিরে নতুন স্বপ্ন বুনছে দেশের ফুটবল পরিবার। শুধু নারী দল নয়, প্রথমবারের মতো পুরুষ ফুটসাল দল গঠনের কাজও শুরু হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে আনা হয়েছে একজন ইরানি কোচ। যদিও এখনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ না খেলায় পুরুষ দলের কোনো র্যাঙ্কিং নেই।
নারীদের একমাত্র আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ
বাংলাদেশ নারী ফুটসাল দলের আন্তর্জাতিক অভিষেক হয় ২০১৮ সালে, থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত এএফসি নারী এশিয়ান কাপ ফুটসালে। সেটিই ছিল তাদের প্রথম ও একমাত্র টুর্নামেন্ট। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ভিয়েতনাম, চাইনিজ তাইপে ও মালয়েশিয়ার কাছে হেরে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয়েছিল লাল-সবুজদের। তবুও সেটি ছিল দেশের নারী ফুটসাল ইতিহাসের এক নতুন সূচনা।
এএফসি নারী ফুটসালের ইতিহাসে বাংলাদেশ
এএফসি নারী ফুটসাল টুর্নামেন্ট প্রথম শুরু হয় ২০১৫ সালে। কিন্তু বাংলাদেশ সুযোগ পায় তিন বছর পর, ২০১৮ সালে। সরাসরি মূলপর্বে খেলার সেই অভিজ্ঞতা দেশের জন্য ছিল বড় প্রাপ্তি। এরপর দীর্ঘ বিরতির পর সম্প্রতি এই টুর্নামেন্টের তৃতীয় আসর বসেছে। তবে বাংলাদেশ সেখানে অংশ নেয়নি। তবুও বিস্ময়ের বিষয় হলো—নিয়ম অনুযায়ী চার বছরের মধ্যে আন্তর্জাতিক ম্যাচ না খেললে দলগুলোকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়, কিন্তু বাংলাদেশ নারী দল এখনো ফিফার র্যাঙ্কিংয়ে টিকে আছে।
ব্যক্তিগত সাফল্যে আলো ছড়াচ্ছেন ফুটবলাররা
বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন দেশের বাইরে একাধিকবার ফুটসাল খেলেছেন। তার অভিজ্ঞতা ও পারফরম্যান্স বাংলাদেশ ফুটসালকে আন্তর্জাতিক পরিসরে পরিচিত করতে সহায়তা করেছে। এছাড়া জাপানি বংশোদ্ভূত সুমাইয়া মাতসুসিমাও বিদেশে ফুটসাল খেলেছেন এবং বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন।
সামনে কী অপেক্ষা করছে?
বাংলাদেশ নারী ফুটসালের জন্য এখন সবচেয়ে বড় প্রয়োজন নিয়মিত খেলা ও আন্তর্জাতিক আসরে অংশগ্রহণ। শুধু র্যাঙ্কিংয়ে নাম টিকিয়ে রাখাই নয়, বরং প্রতিযোগিতামূলক মান বাড়িয়ে সাফল্য পাওয়াটাই হওয়া উচিত মূল লক্ষ্য। আর বাফুফের নতুন উদ্যোগ ও পরিকল্পনা সফল হলে ভবিষ্যতে হয়তো বাংলাদেশ নারী ফুটসাল দল আরও বড় কিছু করতে পারবে।
শেষকথা
ফিফার নারী ফুটসাল র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের ৪৪তম অবস্থান নিছক একটি সংখ্যা নয়—এটি সম্ভাবনার প্রতীক। যে দল মাত্র একবার আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট খেলেও এতদিন তালিকায় টিকে আছে, তারাই প্রমাণ করে দিয়েছে যে ইচ্ছে থাকলে সবই সম্ভব। এখন প্রয়োজন পরিকল্পনা, পরিশ্রম আর ধারাবাহিকতা। হয়তো খুব শিগগিরই ফুটসালের রঙিন দুনিয়ায় বাংলাদেশ হয়ে উঠবে নতুন এক শক্তি।
আরও পড়ুন
১.জাতীয় দলের ক্যাম্পে যোগ দিলেন কিউবা মিচেল
২.লা লিগায় বার্সেলোনার নাটকীয় জয়, অ্যাটলেটিকো আবারও পয়েন্ট খোয়াল
৩.পেনাল্টি গোলে রিয়ালের ঐতিহাসিক জয়
0 মন্তব্যসমূহ