ছাত্রীরাই এবার ডাকসুর ভাগ্য নির্ধারণ করবেন: উমামা ফাতেমা

নিজস্ব প্রতিবেদক ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, 

আসন্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে নারী শিক্ষার্থীদের ভূমিকা নিয়ে আশাবাদ প্রকাশ করেছেন ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) পদপ্রার্থী উমামা ফাতেমা। তাঁর মতে, এবারের নির্বাচনে প্রায় অর্ধেক ভোটারই ছাত্রী, আর তাঁদের সিদ্ধান্তেই নির্ধারিত হবে ডাকসুর গতিপথ।

শনিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে প্রচারণা চলাকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন উমামা ফাতেমা। তিনি বলেন, “এবার মোট ভোটারের মধ্যে প্রায় ৪৭ শতাংশই নারী। মেয়েরা সাধারণত যুক্তিসংগত সিদ্ধান্তে বিশ্বাসী, সহজে কারও প্রভাবে আসেন না। তাই আমি মনে করি, ডাকসুর ফলাফলে ছাত্রীদের ভোটই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”

নারী ভোটারই গড়বে ব্যবধান

ডাকসুর এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩৯ হাজার ৮৭৪ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১৮ হাজার ৯৫৯ জন। উমামা ফাতেমার মতে, এত বিপুলসংখ্যক নারী শিক্ষার্থী ভোট দিতে আসলে ফলাফলে স্পষ্ট ব্যবধান তৈরি হবে। তিনি বলেন, “ছাত্রীরা স্বাধীনচেতা মনোভাবের কারণে সবসময় যুক্তি ও বিবেচনা দিয়ে সিদ্ধান্ত নেন। তাঁদের উপস্থিতি নিশ্চিত হলে ডাকসুর দিকনির্দেশনাই পাল্টে যাবে।”

নারী ভোট আনার চ্যালেঞ্জ

তবে নারী ভোট নিশ্চিত করা সহজ হবে না বলে মনে করেন উমামা। তাঁর ভাষায়, “অনেকেই ইতিমধ্যে বাড়ি চলে গেছেন, আবার অনেক ছাত্রী পরীক্ষার প্রস্তুতির কারণে হলে থাকলেও ভোট নিয়ে আগ্রহী নন। এমনকি পরিবার থেকেও অনেককে বাসায় চলে যেতে বলা হয়েছে। এতে নারী ভোটারের উপস্থিতি কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, ছাত্রীদের ভোটকেন্দ্রগুলোর অবস্থান অনেক হলে থেকে দূরে রাখা হয়েছে। এর ফলে ভোট দিতে আগ্রহ কমতে পারে। “যত দূরে ভোটকেন্দ্র রাখা হবে, মেয়েদের উপস্থিতি তত কমে যাবে। এ কারণে তাঁদের কেন্দ্রে আনা একটি বড় চ্যালেঞ্জ,” বলেন তিনি।

মেয়েদের দৃষ্টিভঙ্গিই বড় শক্তি

ভিপি প্রার্থী উমামা ফাতেমা মনে করেন, মেয়েদের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি অনেক বেশি বাস্তবধর্মী। তাঁরা দলীয় প্রভাব বা বাহ্যিক চাপে সিদ্ধান্ত না নিয়ে নিজেদের অভিজ্ঞতা ও বিবেচনার ভিত্তিতে ভোট দেন। তিনি বলেন, “মেয়েরা কোনো প্রতিশ্রুতির মোহে সহজে পড়েন না। তাঁদের চিন্তাভাবনা সব সময় আলাদা। তাই আমি বিশ্বাস করি, এবারের ডাকসু নির্বাচনের মূল শক্তি হবেন ছাত্রীরাই।”

নির্বাচন ৯ সেপ্টেম্বর

আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচন ঘিরে ইতিমধ্যে বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীরা প্রচার চালাচ্ছেন। দীর্ঘ এক যুগ পর ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে।

কেন গুরুত্বপূর্ণ নারী ভোট?

বিশ্লেষকদের মতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় অর্ধেক ভোটার নারী হওয়ায় তাঁদের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত ফলাফলে বড় প্রভাব ফেলবে। অনেক সময় একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর ভোটে নির্বাচনী সমীকরণ পাল্টে যেতে দেখা যায়। এবারের নির্বাচনে সেটি হতে পারে নারী শিক্ষার্থীদের ভোট।

উমামা ফাতেমা তাই শুরু থেকেই নারী শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, “আমার বিশ্বাস, যদি মেয়েরা ভোট দিতে কেন্দ্রে আসেন, তাহলে তাঁরাই ডাকসুর ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নির্ধারণ করবেন। এবারের ব্যবধান গড়ে দেবেন কেবল ছাত্রীরাই।”



আরও পড়ুন 

১. ক্ষমা চেয়ে আবেদন করলেন উমামা ফাতেমা

২.ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচন: সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করলেন পরিবেশ উপদেষ্টা

৩.খাদ্য মজুদ ইতিহাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে: দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় ইতিবাচক সাফল্য


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ