হামজাকে ছাড়াই নেপাল সফরে নামবে বাংলাদেশ দল

নিজস্ব প্রতিবেদন |২ সেপ্টেম্বর  ২০২৫| মঙ্গলবার |

বাংলাদেশ ফুটবল দলকে নেপালের বিপক্ষে আসন্ন দুই প্রীতি ম্যাচে মাঠে নামতে হবে গুরুত্বপূর্ণ ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরীকে ছাড়াই। ইংলিশ চ্যাম্পিয়নশিপে খেলার সময় পাওয়া ইনজুরির কারণে তাঁকে ছাড়াই লাল–সবুজ জার্সির লড়াই দেখতে হবে সমর্থকদের।


গত শুক্রবার রাতে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় স্তরের লিগে লেস্টার সিটির হয়ে বার্মিংহাম সিটির বিপক্ষে খেলতে নেমেছিলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই মিডফিল্ডার। ম্যাচের ৭২ মিনিটে চোটের কারণে তাঁকে মাঠ ছাড়তে হয়। যদিও লেস্টার সেই ম্যাচে ২–০ গোলে জয় পেয়েছিল, কিন্তু দলে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড়দের একজন হামজাকে হারানো তাদের জন্যও চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।


বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) তাঁকে নেপাল সফরে আনতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালালেও শেষ পর্যন্ত লেস্টার সিটি সিদ্ধান্ত নেয় ঝুঁকি না নেওয়ার। জাতীয় দলের ম্যানেজার আমের খান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, "হামজার এজেন্ট সরাসরি বলেছেন, সাম্প্রতিক ইনজুরি ও সামনে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ মাথায় রেখে তাঁরা চূড়ান্তভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। লেস্টার মনে করছে এখনই তাঁকে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে দেওয়া নিরাপদ নয়।"


লেস্টার সিটির এই অবস্থান একদমই অপ্রত্যাশিত নয়। কারণ আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর তাদের প্রতিপক্ষ অক্সফোর্ড ইউনাইটেড। ওই ম্যাচে হামজাকে মাঠে নামানোর পরিকল্পনা রয়েছে ক্লাবটির। তাই ইনজুরি কাটিয়ে পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার আগে তাঁকে জাতীয় দলে ছাড়ার ঝুঁকি তারা নিতে রাজি হয়নি।


বাংলাদেশের ফুটবল সমর্থকদের জন্য এটি হতাশার খবর হলেও কোচিং স্টাফরা বিষয়টি বাস্তবতা হিসেবে মেনে নিয়েছেন। জাতীয় দলের ডিফেন্ডার তপু বর্মণও স্বীকার করেছেন হামজার অনুপস্থিতি দলের জন্য বড় ধাক্কা। তিনি বলেন, "হামজাকে ছাড়া নেপালের বিপক্ষে খেলা কঠিন হবে। তবে আমাদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা থাকবে। দলের প্রতিটি খেলোয়াড়কে দায়িত্ব আরও বেশি করে নিতে হবে।"


বাংলাদেশের হয়ে হামজার অভিষেক হয়েছিল চলতি বছরের মার্চে, ভারতের বিপক্ষে এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে। এরপর আরও দুটি ম্যাচে জাতীয় জার্সি গায়ে চাপান তিনি। স্বল্প সময়ে তাঁর পারফরম্যান্স দলকে নতুন আশার আলো দেখিয়েছিল। তাই নেপালের বিপক্ষে তাঁকে না পাওয়া নিঃসন্দেহে বড় ঘাটতি।


নেপালের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ দুটি অনুষ্ঠিত হবে ৬ ও ৯ সেপ্টেম্বর, কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে। ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ে নেপালের অবস্থান ১৭৬তম, আর বাংলাদেশ রয়েছে ১৮৪তম স্থানে। র‍্যাঙ্কিংয়ের ব্যবধান বেশি না হলেও সাম্প্রতিক সময়ে নেপালের ফর্ম তুলনামূলক ভালো। এশিয়ান কাপ বাছাই সামনে রেখে উভয় দল এই ম্যাচগুলোকে প্রস্তুতির অংশ হিসেবে নিয়েছে।


নেপাল সফরের পর অক্টোবরেই বাংলাদেশকে খেলতে হবে বাছাইপর্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি ম্যাচ। ‘হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে’ ভিত্তিতে হংকংয়ের মুখোমুখি হবে জাভিয়ার ক্যাবরেরা শিষ্যরা। প্রথম ম্যাচ ঢাকায় ৯ অক্টোবর, আর ফিরতি লড়াই হংকংয়ে ১৪ অক্টোবর। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ দুই ম্যাচে মাত্র ১ পয়েন্ট পেয়েছে এবং তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে। হংকং ও সিঙ্গাপুর সমান ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে, আর ভারত বাংলাদেশের মতোই ১ পয়েন্ট পেলেও গোল পার্থক্যে নিচে অবস্থান করছে।


সবকিছু মিলিয়ে নেপাল সফরে হামজাকে না পাওয়া বাংলাদেশের জন্য এক বড় ধাক্কা হলেও কোচিং স্টাফরা বিকল্প কৌশল খুঁজছেন। তরুণদের সুযোগ দেওয়া হতে পারে এই দুই ম্যাচে। জাতীয় দলের লক্ষ্য শুধু ফল নয়, বরং মূল বাছাইপর্বের আগে নিজেদের দুর্বলতা চিহ্নিত করা এবং সেরা একাদশ গড়ে তোলা।



আরও পড়ুন

১.নারী ফুটসাল র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ ৪৪তম, ভারত অনেক পিছিয়ে ৮৭তম স্থানে

২.জাতীয় দলের ক্যাম্পে যোগ দিলেন কিউবা মিচেল

৩.লা লিগায় বার্সেলোনার নাটকীয় জয়, অ্যাটলেটিকো আবারও পয়েন্ট খোয়াল

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ