add

সর্বশেষ জাতীয় আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিনোদন খেলাধুলা তথ্যপ্রযুক্তি স্বাস্থ্য ইসলাম শিক্ষা জীবনধারা

৪১ হাজার শিক্ষকের নিয়োগ ঝুলছে উপদেষ্টার অনুমোদনের অপেক্ষায়

নিজস্ব প্রতিবেদন |১৯ আগস্ট ২০২৫,মঙ্গলবার

বাংলাদেশের বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। অ-সরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) ইতিমধ্যেই নিয়োগের সুপারিশ তৈরি করেছে। তবে সবকিছু এখন নির্ভর করছে শিক্ষা উপদেষ্টা ড. সি আর আবরারের অনুমোদনের ওপর। তিনি সম্মতি দিলেই প্রায় ৪১ হাজার প্রার্থী দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগদানের সুযোগ পাবেন।

এনটিআরসিএ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিয়োগ কার্যক্রমের জন্য সমস্ত প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কার্যনির্বাহী সচিব মো. মজিবুর রহমান ফাইল অনুমোদন করে দিয়েছেন। এখন শুধু উপদেষ্টার সায় পাওয়াই বাকি। মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সোমবার ১৮ আগস্ট উপদেষ্টার কাছে নিয়োগসংক্রান্ত ফাইল পাঠানো হবে। তিনি অনুমোদন দিলে সেদিনই নিয়োগের সুপারিশ প্রকাশ করা হবে। যদি কোনো কারণে বিলম্ব ঘটে, তবে মঙ্গলবার ১৯ আগস্ট প্রকাশিত হবে।

এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বলেন, “৪১ হাজারেরও বেশি শিক্ষকের নিয়োগের জন্য আমরা সুপারিশ তৈরি করেছি। সচিব মহোদয়ের অনুমোদন ইতোমধ্যে পাওয়া গেছে। এখন শুধু উপদেষ্টার সম্মতির অপেক্ষা। খুব দ্রুতই আমরা নিয়োগপ্রাপ্তদের তালিকা প্রকাশ করব।”

চলতি বছরের ১৬ জুন এনটিআরসিএ শিক্ষক নিয়োগের ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, দেশের বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এক লাখের বেশি শূন্যপদ পূরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয় ২২ জুন এবং শেষ হয় ১০ জুলাই রাত ১২টায়। আবেদন ফি জমা দেওয়ার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৩ জুলাই রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত।

এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আবেদন করেছিলেন প্রায় ৫৭ হাজারের বেশি প্রার্থী। অথচ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী মোট শূন্যপদ ছিল ১ লাখ ৮ হাজার ৮২২টি। এর মধ্যে স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে ৪৬ হাজার ২১১টি, মাদ্রাসায় ৫৩ হাজার ৫০১টি এবং কারিগরি ও ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানে ১ হাজার ১১০টি শূন্যপদ ছিল। অর্থাৎ শূন্যপদ অনেক বেশি থাকলেও প্রার্থীর সংখ্যা তুলনামূলক কম হওয়ায় এবার প্রায় অর্ধেক পদ শূন্যই থেকে যেতে পারে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, নিয়োগপ্রাপ্তদের পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া এখনো চলমান রয়েছে। তবে শিক্ষক সংকট নিরসন ও শিক্ষার্থীদের স্বার্থে দ্রুত নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করতে এনটিআরসিএ অনুমোদন চেয়েছে। এজন্য চূড়ান্ত ভেরিফিকেশন শেষ হওয়ার আগেই সুপারিশ প্রকাশ হতে পারে। পরবর্তী সময়ে আনুষ্ঠানিক যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা হবে।

নিয়োগ প্রক্রিয়ার অপেক্ষায় থাকা প্রার্থীদের মধ্যে ইতোমধ্যেই আশা ও উৎকণ্ঠার মিশ্র অনুভূতি তৈরি হয়েছে। অনেকেই বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে তারা চাকরির অপেক্ষায় ছিলেন। এনটিআরসিএর এই সুপারিশ প্রকাশ হলে তাদের জীবনে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে। বিশেষ করে যারা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতার পেশায় যুক্ত হওয়ার স্বপ্ন দেখছিলেন, তাদের জন্য এ নিয়োগ হবে এক বিরাট স্বস্তির খবর।

বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় বেসরকারি এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু শিক্ষক সংকটের কারণে অনেক জায়গায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্কুল-মাদ্রাসাগুলোতে শিক্ষক স্বল্পতা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে একসঙ্গে বিপুলসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ হলে শিক্ষার মান উন্নয়ন এবং পাঠদান কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

তবে শূন্যপদ অনেক বেশি থাকা সত্ত্বেও আবেদনকারীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায় এবারও দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক পদ খালি থেকে যাবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর ফলে ভবিষ্যতে আরও একটি নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্রয়োজন দেখা দিতে পারে। তবুও চলমান নিয়োগ কার্যক্রম শিক্ষা খাতের জন্য ইতিবাচক দিক হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে।

সবশেষ খবর অনুযায়ী, সোমবার অথবা মঙ্গলবারের মধ্যে যদি শিক্ষা উপদেষ্টা অনুমোদন দেন, তবে নিয়োগের সুপারিশ প্রকাশিত হবে। এ সুপারিশ প্রকাশ হলে দেশের প্রায় ৪১ হাজার প্রার্থী নতুনভাবে শিক্ষকতার পেশায় যুক্ত হওয়ার সুযোগ পাবেন। যদিও সব পদ পূর্ণ না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, তবুও এটি হবে বাংলাদেশে একসঙ্গে শিক্ষক নিয়োগের ইতিহাসে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।


আরও পড়ুন 

1.এসএসসি পুনর্নিরীক্ষণের ফল: আজ সন্ধ্যা থেকে একাদশে ভর্তির আবেদন

2.গাজায় টানা হামলায় নিহতের সংখ্যা ৬২ হাজার ছাড়াল

3.সিলেটে যৌথ বাহিনীর অভিযান: বিপুল সাদাপাথর উদ্ধার

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ